আনোয়ার হোসাইন (সুনামগঞ্জ)
হাজিরা দিতে এসে সুনামগঞ্জের আদালত চত্ত্বর এলাকায় চাচাতো ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে খোকন মিয়া নামের এক যুবক নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে জেলা আইনজীবী সমিতির সম্মুখে এ খুনের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় জড়িত তিনজনকে তাৎক্ষণিকভাবে আইনজীবী ও আইনজীবী সহকারীরা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করলেও সাহান মিয়া নামের একজন পুলিশের জিম্মা থেকে পালিয়ে যায়।
নিহত খোকন মিয়া জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের গলাখাই গ্রামের ফটিক মিয়ার ছেলে। আর আটককৃত ৩ জন হলেন- জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের গলাখাই গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে ফয়েজ আহমদ, আফরোজ মিয়ার ছেলে সাজিদ মিয়া ও সেবুল মিয়া।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খোকন মিয়ার সাথে খুনের ঘটনায় জড়িত চার যুবক জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। তারা সম্পর্কে আপন চাচাতো ভাই। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলা চলছিল। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) নির্ধারিত তারিখে আদালতে হাজিরা দিতে আসলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আইনজীবী সমিতির সামনে খোকন মিয়াকে একা পেয়ে ফয়েজ, সাজিদ, সাহান ও সেবুল উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। বিষয়টি দেখে উপস্থিত জনতা, আইনজীবী ও তাদের সহকারীরা এগিয়ে এসে ফয়েজ, সাজিদ ও সেবুলকে ধরে আইনজীবী সমিতিতে আটকে রাখেন। সাহান নামের অপর একজন পালানোর সময় জনতার হাতে আটক হয়। তাকে আদালত এলাকায় দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্যদের জিম্মায় দিলে সেখান থেকে পালিয়ে যায় সে। আটক তিনজনকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুসহ পুলিশে সোপর্দ করেছেন আইনজীবী ও তাদের সহযোগীরা।
এদিকে, ছুরিকাঘাতে আহত খোকন মিয়াকে আইনজীবী ও তাদের সহকারীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালে বেলা ১ টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
ছুরিকাঘাতে আহত খোকন মিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. রফিকুল ইসলাম।
খবর পেয়ে বেলা দেড়টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবু সাঈদ। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আইনজীবীদের সহযোগিতায় যে তিনজনকে আটক করা হয়েছে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার কারণ জানা হবে।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় কর্তব্যরত পুলিশ কর্তৃক দায়িত্ব পালনে অবহেলার কোন প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।