রাজবাড়ীতে পরকীয়া করতে গিয়ে এলাকাবাসীর হাতে আটক।
বিপ্লব বিশ্বাস, রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা আলিপুর ইউপি ২ নং ওয়ার্ড বারবাকপুর গ্রামের মোঃ আবেদ খাঁর ছেলে প্রবাসী মোঃ সুমন খাঁর স্ত্রী মোসাম্মৎ সুমি বেগম ,। একই ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড কোমর পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রবের ছেলে ফরিদপুর বিস্কুট বেকারি কর্মরত নূর মোহাম্মদ (১৮) সাথে , পরকীয়া করতে গিয়ে বারবাকপুর গ্রামের প্রবাসী সুমন খাঁর নিজ বাড়িতে রাত ১২টার দিকে পরকীয়া প্রেমিক নূর মোহাম্মদের সঙ্গে জনতার হাতে আটক হন, প্রেমিকা সুমি ও পরকীয়া প্রেমিক নূর মোহাম্মদ ।প্রত্যক্ষদর্শী এক যুবক বলেন সুমি বেগম ও নূর মোহাম্মদ এই দুইজনের পরকীয়া প্রেম ও অনৈতিক কার্যকাপ দীর্ঘ আট মাস যাবত চলে আসছিল বলে এই যুবক, এই প্রতিবেদক কে বলেন মাঝেমধ্যেই এই ছেলেকে রাতের অন্ধকারে এই বাড়িতে আসা-যাওয়া করতে দেখে আমার সন্দেহ হয় ।
আমার পার্শ্ববর্তী ২ ৪ জনের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করিলে তারা পাহারা দেয়ার পরামর্শ দেন , আমি তাদের পরামর্শ অনুযায়ী গরু চোর ভেবে সন্ধ্যার পর হইতে নিয়মিত নজর রাখতে থাকি ।
৩০ শে জুন রাত আনুমানিক ১০টার দিকে একজন অপরিচিত ছেলেকে প্রবাসী সুমন খাঁর বাড়ির দিকে যেতে দেখলে তাকে ফলো করতে থাকি একপর্যায়ে প্রবাসী সুমন খাঁর স্ত্রী মোসাম্মৎ সুমি বেগম হঠাৎ দরজা খুলে দিলে আমার সন্দেহর মোড় গরু চোর হইতে অন্যদিকে চলে যায় , কিছু না বুঝেই বিষয়টি নিয়ে আমি আমার ভাইয়ের সাথে ও পার্শ্ববর্তী ২-৪ জনের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করি , আলোচনায় বিষয়টি উঠে আসে এটি একটি পরকীয়া, তখনই আমরা তাকে আটক করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি । আমরা প্রথমে সুমির ঘরের জানালা খুলতে সক্ষম হই জানালা খুলে সুমিকে সতর্ক করতে থাকি ছেলেটাকে বের করে দাও এবং ওয়াদা করো এই ছেলে কখনো যেন আর এই এলাকায় না আসে , সুমি তাতে রাজি না হয়ে উল্টো আমাদের কে শাসাইতে থাকে এবং সকালে মামলা করবে বলে হুমকি দিতে থাকে , একপর্যায়ে পরকীয়া প্রেমিককে ঘরের মধ্যে দেখে ফেলি , তখনই প্রবাসী সুমন খাঁর বাবা ও মাকে বিষয়টি অবগত করি , সুমনের বাবা ও মায়ের অনুমতি নিয়ে সুমির ঘরের দরজা খুলতে চেষ্টা করি , সুমি ঘরের দরজা না খোলায় এলাকাবাসী ঘটনা স্থলে একত্র হয়। অনেক চেষ্টার পরে সুমির ঘরের দরজা খুলতে এলাকাবাসীসহ আমরা সক্ষম হই ।
পরকীয়া প্রেমিক যুবক কে ঘরের খাটের নিচে একটি হাফপ্যান্ট পড়া অবস্থায় পাওয়া যায় , প্রেমিকা সুমিকে একটি গেঞ্জি পড়া অবস্থায় ঘরের মধ্যে পাওয়া যায় , ঘর হইতে যুবককে বের করার পরে এলাকাবাসী সহ আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকি , জিজ্ঞাসাবাদে তার পরিচয় মিলে রাজবাড়ী সদর আলিপুর ইউপি ১নং ওয়ার্ড, তার নাম নূর মোহাম্মদ পিতা মৃত আব্দুর রব , গ্রাম কোমর পাড়া তার ইউপি সদস্য আইয়ুব ,।বারান্দায় বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে এক পর্যায় দৌড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করে , পরকীয়া প্রেমিক নূর মোহাম্মদ কে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পুনরায় ধরতে সক্ষম হয় । প্রেমিকা সুমির বাড়িতে পরকীয়া প্রেমিক নূর মোহাম্মদ কে বেঁধে রাখা হয়। আলিপুর ইউপি ২ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ ওমর খাঁর বোনের বাড়ি প্রবাসী সুমন খাঁ, ওমর খাঁর ভাগিনা পরকীয়া প্রেমিকা ইউপি সদস্য ওমর খাঁর ভাগিনা বউ বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওমর খার ছোট ভাগিনা নয়ন খাঁ, ঘটনাস্থলে সাবেক ইউপি সদস্য ওমর খাঁ আসিলে , খবর পৌঁছানো হয় নূর মোহাম্মদের বাড়িতে ।
কোমর পাড়া বাসিন্দা মৃত আব্দুর রবের স্ত্রী নূর মোহাম্মদের মা সাহেরা বেগম খবর পেয়ে ইউপি সদস্য আইয়ুবকে নিয়ে ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে , প্রেমিকা সুমি বেগমের মা ও বাবা বসন্তপুর হইতে ছুটে আসেন ঘটনা স্থলে , ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য ইউপি সদস্য ওমর মেম্বার এর নেতৃত্বে বসানো হয় ঘরোয়া বিচার । বিচারকদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে তথ্য দেন এলাকাবাসী ও নূর মোহাম্মদের মা সাহেরা বেগম অভিযোগ করে বলেন আমার ছেলেকে ষড়যন্ত্র করে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে ফাঁসানো হয়েছে , আমার ছেলেকে অনেক মারপিট করা হয়েছে মেরে তাকে উঠানে ফেলে রাখা হয়েছিল , আমি সময় মতন ইউপি সদস্যকে না নিয়ে গেলে ওরা আমার ছেলেকে মেরে গুম করে ফেলত , সুমির স্বামী সাত মাস যাবত প্রবাসে গিয়েছে এই মহিলা অনেক খারাপ , এই ধরনের অভিযোগ সুমির আরো রয়েছে বলে সাহেরা জানান, আমি ঘটনা স্থলে যাওয়ার পরে এলাকাবাসী আমাকে এই তথ্য জানিয়েছে।
সুমির মামাশ্বশুর ওমর মেম্বার আমার নিকট হইতে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখিয়া আমার ছেলেকে আমার হাতে দিয়ে দিয়েছে , আমি ছেলেকে আনিয়া ডাক্তার দেখিয়ে আমার মেয়ে বাড়িতে রেখেছি ।
২ নং ইউপি সাবেক সদস্য ওমর খাঁর নিকট প্রশ্ন করা হয় , সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার এক্তিয়ার আপনার আছে কি,উত্তরের সাবেক ইউপি সদস্য ওমর খাঁ, বলেন সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখেছি , স্ট্যাম্প পরে লেখা হবে বলে এই প্রতিবেদককে জানান ওমর খাঁ, সুমি বেগমের বাবা-মাকেও সাদা ইস্টাম্পে স্বাক্ষর রেখে সুমিকে তার বাবা মার হাতে তুলে দেয়া হয় , এই প্রতিবেদক সুমি ও নূর মোহাম্মদ কে অনুসন্ধানে গেলে কাউকে বাড়ি পাওয়া যায়নি , নূর মোহাম্মদের মা জানান আমার ছেলে আমার মেয়ে বাড়ি রামপুরে আছে । সাবেক ইউপি সদস্য ওমর খাঁ জানান আমার ভাগিনা বউ তার মা বাবার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে সে এখন বসন্তপুর তার মা ও বাবার বাড়িতে আছে । এই প্রতিবেদক প্রবাসী সুমনের বাড়িতে অনুসন্ধানে গেলে সুমনের মা ও বাবা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি , সুমনের ছোট ভাই নয়ন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন , একপর্যায়ে প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করা হয় , পেশাগত দায়িত্বে প্রতিবেদক অটল থাকায় সেটা সম্ভব হয়নি । আলিপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য আলিমকে প্রশ্ন করা হলে এই প্রতিবেদককে ইউপি সদস্য আলিম বলেন আমার ওয়ার্ডে এরকম একটি চাঞ্চলক্ষর ঘটনা আমাকে কেউ অবগত করেনি , ঘটনাটি ওমর মেম্বারের আত্মীয়র মধ্যে হওয়ায় এর চাইতে বেশি কিছু আমি বলতে পারছি না , পাঠকগণ লেখার ভাষায় বুঝে নিবেন তাহলে সাবেক ইউপি সদস্য ওমর খাঁ স্থানীয়ভাবে কতটা অভাবশালী , বর্তমান ইউপি সদস্য মন্তব্য করতে নারাজ , তাহলে সাধারণ জনগণ প্রকাশ্যে এই প্রতিবেদককে কি তথ্য দেবে , ওমর মেম্বার এর ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ এলাকাবাসী , এই জন্য বারবার বলা হয়েছে প্রত্যক্ষ দুষিরা নাম প্রকাশে অনিচ্ছু । সুমি বেগমের দুটি বাচ্চা রয়েছে বলে বাড়ি বাড়ি সূত্রে জানা যায় , সুমন খা, সাত মাস যাবত প্রবাসে গিয়েছে বলে তার বাড়ি বাড়ি সূত্রে নিশ্চিত করা হয়। পরকীয়া প্রেমিক নূর মোহাম্মদ ফরিদপুর একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে চাকুরী রত অবস্থায় রয়েছে বলে তার বাড়ি বাড়ি সূত্রে নিশ্চিত করে , নূর মোহাম্মদের মা সাহেরা বেগম বলেন আমার ছেলের বয়স এখনো ১৮ হয়নি আমার ছেলে বিয়ের উপযুক্ত হয়নি, বিধায় এখনো তাকে বিয়ে দেয়া হয় নাই , আমার স্বামীর মৃত্যুর পরে মানুষের বাড়ি কর্ম করে আমি আমার সন্তানদের লালন পালন করেছি, বলে সাহেরা জানান । এখন এই খারাপ মহিলা সুমি আমার ছেলেকে নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে বলে সাহেরার অভিযোগ । রাজবাড়ী সদর ৪ নং আলিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক এই প্রতিবেদক কে বলেন , আমি ঢাকায় ছিলাম , এই বিষয়ে আমাকে কেউ অবগত করেনি , তবে এইমাত্র আংশিক একটু খবর পেয়েছি বিস্তারিত বলতে পারছি না , বিস্তারিত জেনে বিষয়টি পরবর্তীতে আপনাদেরকে নিশ্চিত করা হবে বলে চেয়ারম্যান জানান।