মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ (নাশকতা) করা মামলায় জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আব্দুর রাজ্জাক রাজাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। পরে কারাগারে নেওয়ার সময় আদালত চত্বরের ভেতর তাঁকে বহনকারী পুলিশের প্রিজন ভ্যানকে লক্ষ্য করে ডিম, জুতা ও টমেটো ছোড়েন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় মানিকগঞ্জ সদর থানা থেকে ব্যাপক পুলিশ নিরাপত্তায় আসামি রাজাকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। আইনজীবীদের প্রাথমিক শুনানি শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী। তবে এ সময় আসামি আব্দুর রাজ্জাক রাজার পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন না।
এরপর আসামি রাজাকে জেল হাজতে নেওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা আদালত চত্বরের ভেতর পুলিশের প্রিজন ভ্যানকে লক্ষ্য করে ডিম, জুতা ও টমেটো ছোড়েন। এ সময় ছাত্ররা রাজার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে পুলিশের প্রিজন ভ্যান গতিরোধ করে দাঁড়িয়ে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। প্রায় এক ঘণ্টা পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে পুলিশের আশ্বাস এবং অনুরোধে ছাত্ররা প্রিজন ভ্যান ছেড়ে দেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত হাসনা হেনা অভিযোগ করে বলেন, ‘যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজা একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এই রাজা গত ১৮ জুলাই এবং ৪ আগস্ট তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়ে আমাদের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এতে আমরাসহ অনেকে মারাত্মক জখম হই।’
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী বলেন, আসামিকে আদালতে তোলা হলে তাঁর পক্ষের কোনো আইনজীবী না থাকায় বাদী পক্ষের আইনজীবীদের প্রাথমিক শুনানি শেষে রাজাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) তানভীর হোসেন বলেন, গত ১৮ জুলাই এবং ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার ওপর হামলা এবং মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ (নাশকতা) করা মামলা থাকায় গতকাল বুধবার রাত ১১টায় ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সামনে থেকে আব্দুর রাজ্জাক রাজাকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয়। আজ বৃহস্পতিবার রাজাকে আদালতে তোলা হলে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পরবর্তী তারিখে আসামি রাজার বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহ বলেন, আজ দুপুরের পর আসামিকে ব্যাপক নিরাপত্তায় আদালতে তোলা হলে আদালত তাঁকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।