বুরো প্রধান, ইমরুল আহসান: ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইলের দেওয়ানগঞ্জ বাজারের এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন গত ০৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ দুপুর ১২.১০ ঘটিকায় ইসলামী ব্যাংকের ভালুকা শাখা হতে ব্যাবসা পরিচালনার জন্য নিজের একাউন্ট থেকে ১৬,০০,০০০/- (বোল লক্ষ) টাকা উত্তোলন করে ০৫ জন যাত্রীসহ ভাড়ায় চালিত সিএনজিযোগে গফরগাঁও থানাধীন এশিয়ান হাইওয়ের টানপাড়া এলাকায় পৌঁছালে একটি সাদা প্রাইভেটকার সিএনজিটির গতিরোধ করে এবং একদল অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে তাকে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে জোরপূর্বক প্রাইভেটকারে উঠিয়ে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ১৬,০০,০০০/- (ষোল লক্ষ) টাকা ও সাদ্দাম হোলেন এর ব্যবহৃত ০২ টি মোবাইল ফোন ডাকাতি করে। পরবর্তীতে ডাকাতরা সান্দাম হোসেনের হাত ও চোখ বেঁধে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন ভান্নারা বাজারে রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার গফরগাঁও থানার মামলা (মামলা নং-০৭, তারিখ-১০/১০/২০২৩ ধারা- ১৭০/৩৯৪/৩৪ পেনাল কোড) রুজু হয়।
পুলিশ সুপার, ময়মনসিংহ জনাব মাছুম আহাম্মদ ভূঁঞা, পিপিএম মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে একটি চৌকষ টিম ডাকাতির রহস্য উদ্ঘাটনকল্পে ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে গত ১৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ রাত ০২.১০ ঘটিকায় ডাকাতদলের অন্যতম সদস্য ১। মোঃ আনোয়ার হোসেন (৩৯), পিতা-মোঃ মোস্তফা মোল্লা, ঠিকানা-কোনাবাড়ী, উল্লাপাড়া, সিরাজগার-কে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের সদর থানাধীন লক্ষীপুরা তালুকণার পুকুরপাড় এলাকা থেকে হেফতার করতে সক্ষম হয়। এরপর রাত ০৪.৫০ ঘটিকায় ঢাকা জেলার সাতার থেকে ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী ২। লিটন কাজী দেলোয়ার কাজী (৪০), পিতা-মোঃ মোতালের কাজী, ঠিকানা-ঠাকুর নওয়াপাড়া, বাশিয়াকান্দি, রাজবাড়ী ও সহযোগী ৩। মোঃ রুবেল মিয়া (৩২), পিতা-মোঃ আজাদ মিয়া, ঠিকানা গোপালগঞ্জ সদর, গোপালগঞ্জ-বয়কে গ্রেফতার করা হয়।
ধৃত ১ নং আসামী মোঃ আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ৮০,০০০/- টাকা, ২ নং আসামী লিটন কাজী দেলোয়ার কারীর কাছ থেকে সৃষ্টিত ২,৫০,০০০/- টাকা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার এবং ৩ নং আসামী মোঃ রুবেল মিয়ার কাছ থেকে লুণ্ঠিত ১৪০,০০০/-টাকাসহ সর্বমোট ৪,৭০,০০০/- (চার লক্ষ সত্তর হাজার) টাকা উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।
আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গত ৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ সকাল ৯.০০ ঘটিকায় গাজীপুর চৌরাস্তায় ডাকাতির মূলহোতা আসামী লিটন কাজী অপর আসামী মোঃ আনোয়ার হোসেন ও মোঃ রুবেল মিয়াসহ পলাতক ৫/৬ আসামী একরে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। তারা তিন ভাগে ভাগ হয়, ৫ জন প্রাইভেটকারে ৩৩ জন মোটর সাইকেলে ও বাকী ০২ জন ডাকাত লোকাল বাসে দুপুর ১২:৩০ ঘটিকা নাগাদ ইসলামী ব্যাংক পিএলসি’র ভালুকা শাখায় পৌঁছায়। পলাতক আসামীদের মধ্যে একজন ভিকটিম সাদ্দাম। হোসেনকে নজরে রাখে। কিছুক্ষণ পর সাদ্দাম হোসেন টাকা নিয়ে অন্যান্য যাত্রীদের সাথে একটি ভাড়ায় চালিত সিএনজিতে গফরগাঁওয়ের দিকে রওনা করলে ডাকাতরা মোটর সাইকেল ও প্রাইভেটকারযোগে সিএনজিকে অনুসরণ করতে থাকে এবং শান্তি নামক নির্জন সুবিধাজনক স্থানে পৌঁছালে ডাকাতরা ডিবি পরিচয়ে সাদ্দাম হোসেনকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে ও চোখ বেঁধে প্রাইভেটকারে উঠায়, টাকা ও মোবাইল ফোন ডাকাতি করে এবং পরবর্তীতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানাধীন ভান্নারা বাজারে রাস্তার পাশে ফেলে দ্রুত চनে যায়।
উল্লেখ্যে যে, ডাকাতির মূলহোতা আসামী লিটন কাজীর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ১০টিরও অধিক ডাকাতিসহ দস্যুতা ও মাদক মামলা এবং আসামী মোঃ রুবেল মিয়ার বিরুদ্ধে ০২টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। ইতোপূর্বে স্রেফতারকৃত আসামীসহ পলাতক আসামীরা ভালুকা থানাধীন জমিরদিয়া এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে রানের পোষাক পরিধান করে প্রাইভেটকারে জনৈক মোহাঃ শুভান আলী তাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ৭,৪০,০০০/-টাকা, ০১ টি মোবাইল এবং ভালুকা থানাধীন হবিরবাড়ী নীভক্টোর বাদশাগ্রুপের কামাল ইয়ার্ণ লিমিটেড এর সামনে প্রাইভেটকারযোগে র্যাব পরিচয় দিয়ে জনৈক কানাই চন্দ্র বর্মনকে গতিরোধ করে ৫,০০,০০০/- টাকা ডাকাতি করেছিল যা সমগ্র এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল।
আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া এবং জড়িত অপর আসামীদের গ্রেফতার ও লুষ্ঠিত টাকা উদ্ধারে অভিযান অব্যহত আছে।