নিজস্ব প্রতিনিধি মানিকগঞ্জঃ
মানিকগঞ্জ ডায়াবেটিস হাসপাতাল।
মানিকগঞ্জে হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে দুই কর্মকর্তাকে রড, হকিস্টিক ও স্ট্যাম্প দিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে পৌর এলাকার হিজুলীবাজার এলাকায় অবস্থিত ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ডায়াবেটিস হাসপাতালে ঢুকে মুখোশধারী কয়েকজন তাদের মারধর করে।
হামলার শিকার দুজন হলেন– হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাজনিন আক্তার বিউটি ও সমাজ কল্যাণ অফিসার নিতাই কুমার সরকার। নাজনিন আক্তার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। নিতাই কুমার সরকারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
হামলায় আহত নাজনিন আক্তার বিউটি বলেন,দুপুর দেড়টার দিকে নিজ কক্ষে বসে স্টাফদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। এসময় ৪০ থেকে ৫০ জন দুর্বৃত্ত মাস্ক পরে এসে আমাকে স্ট্যাম্প ও রড দিয়ে পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা আমাকে টেনে হিঁচড়ে হাসপাতালের নিচে নামিয়ে আনে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এলে দুর্বৃত্তরা চলে যায়। পরে হাসপাতালের অন্য স্টাফরা আমাকে উদ্ধার করে জেলার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
আহত নিতাই কুমার সরকার বলেন, ‘আমি অফিস কক্ষে বসে কাজ করছিলাম। হঠাৎ মাস্ক পরা বেশ কয়েকজন যুবক আমাকে আওয়ামী লীগের দালাল বলে মারধর করতে থাকে। এ সময় আমি কোনোরকমে জীবন নিয়ে অফিস থেকে বের হতে পেরেছি। দুর্বত্তরা মুখোশ পরা থাকায় আমি কাউকে চিনতে পারিনি।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাইনি। তবে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালের বর্তমানে ব্যবস্থাপনা এডহক কমিটি নিয়ে পূর্বের কমিটির সঙ্গে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের করণে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
ওসি আরও বলেন,এ ঘটনায় এখনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জরিতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মানিকগঞ্জ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ডায়াবেটিস হাসপাতালের পরিচালক ডা. হাসান মাহমুদ হাদি বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি অফিসে ছিলাম না। আমি বিষয়টি জানার পর ডিসি স্যারকে জানিয়েছি।
কমিটির বিরোধ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডা. হাসান মাহমুদ হাদি বলেন, ‘হাসপাতালের আগের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এখন জেলা প্রশাসক স্যার সভাপতি হয়ে এডহক কমিটি পরিচালনা করছেন। এরপর কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন প্রশাসন তদন্ত করলে জানতে পারবে। এরবেশি কিছু বলতে পারব না।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও ডায়াবেটিস হাসপাতালের সভাপতি ড. মনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। ভুক্তভোগীদের থানায় অভিযোগ করতে নির্দেশ দিয়েছি। পাশাপাশি হাসপাতালে পুলিশ টহল বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।