নিউজ ডেক্সঃ
নগর ভবন ছেড়ে পালিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি কার্যালয় ত্যাগ করেন।
অদক্ষতা ও দুর্নীতির অভিযোগে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে সাময়িক বরখাস্ত হন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান। পরে সরকারি কোনো আদেশ ছাড়াই গত সোমবার তাকে প্রকৌশলীর চেয়ারে বসান বিএনপি নেতাকর্মীরা। জানান ফুলেল শুভেচ্ছা। তবে দু’দিন যেতেই আবারও নগর ভবন ছাড়লেন তিনি।
প্রকৌশলী আশিকুর রহমানকে নতুন করে চেয়ারে বসনোর ঘটনায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দলটির সাবেক মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ইশরাক হোসেন। বিএনপি নেতার এই ঘোষণা জানাজানি হলে নগর ভবন ছাড়েন আলোচিত প্রকৌশলী আশিকুর রহমান।
নগর ভবনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত সোমবার চেয়ারে বসানোর পর বরখাস্ত হওয়া প্রকৌশলী আশিকুর প্রতিদিনই অফিস করেছেন। অফিস চলাকালে তাকে পাহারা দিয়েছেন একদল নেতাকর্মী। বিতর্কিত এই প্রকৌশলীকে চেয়ারে বসাতে সূত্রাপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক মেহেদী হাসান লিটু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের নেতা সৈয়দ মুকিতুল হাসান রঞ্জু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নূরে আলম ও কবি নজরুল সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আহসান মানদুদ নেতৃত্ব দিয়েছেন।
এদের সঙ্গে করপোরেশনের শ্রমিক নেতা বলে পরিচয় দেওয়া আরিফুজ্জামান প্রিন্সও ছিলেন। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সূত্রাপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক মেহেদী হাসান লিটু ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের নেতা সৈয়দ মুকিতুল হাসান রঞ্জুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কেউই কথা বলতে চাননি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেন, আমার নাম ভাঙিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে যারা চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বসহ নানা অপকর্ম করছে আসছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হলো।
একইসঙ্গে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বে তার নাম জড়িয়ে সংবাদ প্রচার বিশেষত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমানকে জোরপূর্বক স্বপদে পুনর্বহালের পেছনে তার ইন্ধন রয়েছে মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারেরও তীব্র প্রতিবাদ জানান তিনি।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমাকে জড়িয়ে নানাভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে একটি গোষ্ঠী বা কতিপয় দুর্বৃত্ত আমার নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন মার্কেট, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান দখল, চাঁদাবাজি ও নগর ভবনের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আসছে।
এমনকি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমানকে জোরপূর্বক পুনরায় বসানোর পেছনে আমার ইন্ধন রয়েছে বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রচার করে আসছে।
এ বিষয়ে আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এ ধরনের অপকর্মে আমার ন্যূনতম কোন সম্পৃক্ততা নেই। আমার নাম ভাঙিয়ে একটি চক্র এহেন অপ্রচার চালাচ্ছে। যারা আমার নাম ভাঙ্গিয়ে এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে আসছে, আমি তাদেরকে চিনি না। পাশাপাশি, দখলদারিত্ব, টেন্ডারবাজিসহ যারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করছে, আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রশাসনকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। বিএনপির নাম পরিচয় দিয়ে কোন নেতা-কর্মীর এসব কর্মকাণ্ড জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানাচ্ছি।
সুএঃ দৈনিক অভিযোগ বার্তা