

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর তানোরে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এক সাংবাদিকের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিবের এক মতবিনিময় সভায় প্রবেশ পথে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা ও তার অনুসারীদের দ্বারা এ হামলার শিকার হন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তানোর উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
আহত সাংবাদিক লুৎফর রহমান (৪০) — তিনি দৈনিক কালবেলা ও সোনার দেশ পত্রিকার তানোর উপজেলা প্রতিনিধি। ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত হিসেবে নাম এসেছে রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য ও তানোর উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানের। অপর অভিযুক্তরা হলেন— তানোর সদরের বাসিন্দা ইয়াসিন ঠিকাদার এবং রাজশাহী জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম কুসুম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিজানুর মিজান আগে থেকে লুৎফর রহমানকে ধাক্কা ও হুমকি দেন; পরে কুসুম ও ইয়াসিন মিলে কিলঘুষি ও বেধড়ক মারধর করেন। প্রায় ১০ মিনিট ধরে তারা তার ওপর নির্যাতন চালান।
তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, “ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিক লুৎফর রহমান মোবাইলে আমাদের অবগত করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে দুর্গাপুর প্রেসক্লাব ও স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ। সংগঠনের নেতারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় একজন সাংবাদিকের ওপর হামলা সভ্য সমাজে কখনো কাম্য নয়। আমরা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দাবি করছি।’
নেতারা আরও বলেন, ‘সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
এ ঘটনায় বিএনপির ভেতরেও ব্যাপক সমালোচনা চলছে। দলের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “এই ধরনের আচরণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে; দলের মধ্যে এমন ব্যক্তিদের কোনো স্থান নেই।”
অভিযুক্ত মিজানুর রহমান মিজান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলাম না, কিছু বলতেও পারব না।” অপর অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম কুসুম ও ইয়াসিন ঠিকাদারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।