ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি:
সিলেটের ওসসানীনগর উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ জালাল উদ্দিন ও সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ লোহিত মিয়ার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া সভাপতির পদ নিয়ে দলে দেখা দিয়েছে তীব্র বিরোধ। সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম ও আব্দুল লতিফ দায়িত্ব নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় নামেন সহ-সভাপতি আব্দুল মুহিত বাহার ও রুয়েল খাঁন। দলীয় সম্পাদক দুলু মিয়ার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেত্রী তাহসিনা রুশদী লুনা দুজনকেই জনমত যাচাইয়ের ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্বাচনের আশ্বাস দেন।
এর ধারাবাহিকতায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টায় কিয়ামপুর গ্রামের যুবদল নেতা সুবের মিয়ার বাড়িতে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ময়নুল হক চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস.টি.এম ফখর উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মিছবাহসহ প্রায় দেড় শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে, নির্বাচনকালীন সময়ের অজুহাতে প্রত্যাশিত জনমত যাচাইয়ের পরিবর্তে উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস.টি.এম ফখর উদ্দিন বৈঠকে হঠাৎ ঘোষণা দেন,আমার কাছে নেত্রীর মেসেজ আছে, চাইলে নাম বলতে পারি। এরপর তিনি একতরফাভাবে আব্দুল মুহিত বাহারকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ঘোষণা করেন। এই সময়ে আব্দুল্লাহ মিছবাহ ও অন্য অতিথিরা সমর্থন দিলেও, দর্শক শারীতে উপস্থিত বিএনপি সদস্য ও নেতাকর্মীদের কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
এতে সভাস্থলে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। রুয়েল খাঁনের সমর্থকরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সভাস্থল বর্জন করেন। পরে অতিথি ছাড়া সভায় আর কাউকে দেখা যায়নি।
পরবর্তীতে খবর পেয়ে তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির সমর্থক ফোরামের একটি প্রতিনিধি দল রুয়েল খাঁনের অনুসারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঘটনার নোট নেন এবং প্রয়োজনীয় সমাধানের আশ্বাস দেন।
আব্দুল মুহিত বাহার বলেন,আমি নেত্রীর সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। দায়িত্ব পাওয়া আমার জন্য গৌরবের, সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই।
অন্যদিকে রুয়েল খাঁন জানান, জনমত যাচাইয়ের কথা থাকলেও সেটি মানা হয়নি। একতরফা সিদ্ধান্ত জনগণের রায়কে অসম্মান করেছে। আমরা এ অন্যায় মেনে নিতে পারি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতা জানান, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্বাচন প্রক্রিয়াটি গঠনতন্ত্র বিরোধী। সমস্যা সমাধানের নামে নতুন সমস্যা তৈরি করা সাংগঠনিক অস্থিরতার কারণ হবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস.টি.এম ফখর উদ্দিন জানান, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্বাচন সাধারণত প্রেস রিলিজের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। গণতন্ত্রের চর্চা জোরদার করার জন্যই সবাইকে নিয়ে বসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অল্প কিছু মানুষ তা বয়কট করে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, একই ওয়ার্ড থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে ইউনিয়নের নেতৃত্ব কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই সাংগঠনিক স্বার্থেই সিদ্ধান্তটি ঘোষণা করা হয়েছে।
তুনমৃল বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করেন উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত কর্মী সমর্থকদের বয়কটের ঘটনা দায় আসন্ন নির্বাচনে প্রভাব পড়বে। নেত্রীর উচিত উপজেলা বিএনপি পূর্ণগঠন করে নতুনদের হাতে দায়িত্ব দেওয়া এমনটাই প্রত্যাশা করেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃত্ব নির্বাচনকে ঘিরে দেখা দিয়েছে বিভক্তি ও উত্তেজনা, যা সংগঠনের ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত হয়ে দেখা দিচ্ছে।