সিন্ডিকেট --এই শব্দটির প্রথম উৎপত্তি হয়েছিলো ১৬২৪ সালে, যা মূলত কোন প্রতিনিধিদের গোষ্ঠী বলতে বোঝানো হতো। এর উৎপত্তি হয়েছিলো ফরাসী শব্দ “syndicat” থেকে। যার মানে ছিলো “কোন ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীর বলয়, যারা বলয় সৃষ্টি করে কুকর্ম করতো। সেটার ব্যাপ্তি এখন সমাজের সর্বক্ষেত্রে। শিক্ষায় সিন্ডিকেট, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট, রাজনীতির সিন্ডিকেট, খাদ্যে ভেজালকারীদের সিন্ডিকেট, চালের বাজারের সিন্ডিকেট, ওষুধ বাজারের সিন্ডিকেট, এরকম আরো কত সিন্ডিকেটের কবলে আওয়ামী কর্মীরা তার হিসেব নেই। শুধু সাধারণ কর্মী ও মানুষের কোনো সিন্ডিকেট হয় না। তারা কেবল সিন্ডিকেট চক্রে ঘুরতে পারে। তবে জাল ছিড়ে বেরুনো আর হয়ে ওঠে না। কারণ ওই জাল থেকে বের হলেই আবার সিন্ডিকেট।
আমাদের রাজনীতি সিন্ডিকেট ভয়াবহ। নষ্টরা সব অধিকারে নিতে চায়। রাজনীতি নিয়ে হতাশার কিছুই নেই। তার চেয়ে বেশী কষ্ট লাগে তখন- যখন দেখি অযোগ্য মানুষ এবং নেতৃত্বকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মতো একটা ঐতিহ্যবাহী মুক্তিযুদ্ধের সংগঠনে স্বাধীনতার বিরোধী শক্তিরা স্থান পায়। তবে সেই হতাশা ও অভিমান সাময়িক- কিন্তু পতাকার অমর্যাদা করা বেইমান মানুষদের জন্য কষ্ট আজীবন থাকবে। কারন আমরা যারা দীর্ঘদিন যাবত দলের জন্য কাজ করছি, কর্মী বান্ধব রাজনীতি করছি -বর্তমানে আধুনিক রাজনীতিতে আধুনিক নেতাদের সাথে আমরা নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারছি না বলে -দুঃখিত- নেতা!!
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত জোটের ধ্বংসাত্বক জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন যখন আস্তে আস্তে থেমে যায় তখন থেকে ক্রমান্বয়ে সারা বাংলাদেশ ও সমগ্র ইউরোপে তৃনমূল সম্পৃক্ত ও কর্মীবান্ধব নেতা-কর্মীদের গুরুত্ব কমতে থাকে। রাজপথে কর্মসূচীর পরিবর্তে যখন অডিটোরিয়াম কেন্দ্রীক রাজনীতি চালু হয়ে যায় তখন আমাদের মত কর্মীদের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়। কারন একটা অডিটোরিয়ামে সর্বোচ্চ ২০০-৩০০ লোক হলেই সমাবেশ সফল হয়ে যায়। আর ইউরোপের রাজনীতিতো এমন পর্যায় গিয়েছে কয়েকজন মানুষ মিলেই নেতা বনে যায়।
একই আয়োজক, ঘুরেফিরে একই অতিথি, একই বক্তা, একই কথা, একই শ্রোতা -পাশাপাশি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক চ্যানেল, প্রিন্ট মিডিয়া এবং ফেইজবুক রাজনীতি -তো আছেই। ফলে তৃনমূল নেতা-কর্মীরা আজ কোনঠাসা।
আমরা যারা জীবন বাজি রেখে দিনের পর দিন বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ও বিদেশের মাটি চষে বেড়িয়েছি প্রচারকাজের জন্য শতশত অনলাইন টিমে উদ্দিপনার সহিত প্রচারকাজ পরিচালিত করেছি। আজ আমরা আধুনিক রাজনীতি ও আধুনিক নেতাদের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে না পেরে এক বুক কষ্ট পেয়েছি। আবার নেতাদের কাছে আমাদের প্রয়োজন-ও ফুরিয়ে গেছে। কারন এখন দলের সুদিন। নেতাদের-ও লোকের অভাব নেই। চারপাশে অগনিত শুভাকাঙ্ক্ষী। সিন্ডিকেট রাজনীতি আমাদের কে গুটিয়ে নিতে বাধ্য করেছে। কারন রাজনীতি করি সন্মানের জন্য। ব্যাক্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে তো রাজনীতি করবো না। রাজনীতির মাঠে আজ সবাই সমান। বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত জোটের কঠিন আন্দোলন ও অপপ্রচারে যখন নেতারা দিশেহারা তখন রাজপথ আর অনলাইনে ছিল আমাদের মত চুনোপুঁটি যোদ্ধা ও কর্মীরা। আর যারা সেদিন তেমন কোন ভূমিকা রাখেন নাই আজ তারাই রাজনীতির মাঠে সর্বেসর্বা। নেতারাও আজ তাদের কে মাথায় তুলে রাখছেন। এই সব দেখে আপসোস হয়, কষ্ট লাগে। তারপরও আমি হতাশ না। আমি আশাবাদী মানুষ। অনেক বার মৃত্যুর কাছাকাছি দাঁড়িয়ে জীবনকে দেখেছি। সাহস, ধৈর্য ও সততা দিয়ে আল্লাহর মেহেরবানিতে সকল বাধাকে মোকাবিলা করেছি, এখনো করছি, আগামীতেও করবো ইনশাআল্লাহ। বিশেষ করে গত পাঁচটি বছর আমি প্রতিটি সেকেন্ডে জীবনকে উপলব্ধি করছি- প্রত্যাশিত মানুষদের অবহেলা এবং ভূমিকা দেখেছি কিন্তু অপ্রত্যাশিত মানুষদের সহায়তা ও ভালবাসা পেয়েছি। সবচেয়ে বড় কথা অনেক কিছু শেখার এবং দেখার সুযোগ পেয়েছি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের আবারো প্রয়োজন হবে ইনশাআল্লাহ। কারন রাজনীতির মাঠ সব সময় সমান না। পদের চাইতে আমার বড় পরিচয় আমি মাঠের কর্মী। বুঝতে শিখা ধরে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার জয়গান গেয়ে যাচ্ছি।
আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। আমি রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কর্মী। আমার রয়েছে হাজার হাজার শুভাকাঙ্ক্ষী। যাদের সাথে রয়েছে আমার আত্মার সম্পর্ক। আমি বিশ্বাস করি নেতারা আমাদের কথা ভুলে গেলেও ত্যাগী এবং নিবেদিত প্রান কর্মীরা আমৃত্যু আমাদের পাশে থাকবে ইনশাআল্লাহ্। বিজয় আমাদের হবেই ইনশাআল্লাহ্।
জয়বাংলা -জয় বঙ্গবন্ধু, জয় শেখ হাসিনা।
--লেখকঃ পরিচিত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, -ইকবাল আহমেদ লিটন,সদস্য সচিব ,আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের ও অভিযোগ বার্তার প্রধান উপদেষ্টা সম্পাদক।
প্রধান উপদেষ্টা: ইকবাল আহাম্মদ লিটন|
উপদেষ্টা:প্রফেসার সালেক নিক্সন
প্রকাশক-সম্পাদক এস এম ফিরোজ আহাম্মদ|
অফিস কার্যালয়: ৭০/১ শহীদ রফিক সড়ক মানিকগঞ্জ।|
ই-মেইলঃ ferozahmeed10@gmail.com|
ফোন নং :০১৯৬৮৮০০৮৩০|
ই পেপার