মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
মানিকগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সামনে ভাড়ারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল ও পৌরসভার সফল প্যানেল মেয়র মানিকগন্জের যুব কন্ঠ আব্দুর রাজ্জাক রাজার মধ্যে পাল্টাপাল্টি চড়-থাপ্পড় মারার ঘটনা ঘটেছে।
আজ বুধবার মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আব্দুল জলিল বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় রাতে মামলা করেছেন। পুলিশ আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে ,মানিকগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও যুব কন্ঠ আব্দুর রাজ্জাক রাজার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে রাতে পুরো মানিকগন্জ শহর জুড়ে সাধারণ আম জনাডা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সেই সাথে জেলার নেতা-কর্মী ও স্থানীয় লোকজন এই বিক্ষোভ প্রতিবাদ মিছিল করতে থাকে।
আজ সভায় উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সদর উপজেলা মিলনায়তনে সকাল ১০টায় সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে মানসম্মত শিক্ষা, জনসেবা ও দুর্নীতিসহ মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভা শুরু হয়। এই সভা একটানা চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। এরপর দুপুরের খাবারের বিরতি দেওয়া হয়। বিরতির সময় প্যানেল মেয়র আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল কোনো একটি বিষয় নিয়ে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।
একপর্যায়ে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসরাফিল হোসেন, সদর উপজেলার ইউএনও মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনসহ অন্যান্যদের সামনেই আব্দুল জলিলের গালে থাপ্পড় মারেন আব্দুর রাজ্জাক। এ সময় আব্দুল জলিলও থাপ্পড় মারেন। এ নিয়ে মিলনায়তনের ভেতর দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক হট্টগোল বেধে যায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে একপর্যায়ে ইউএনও সদর থানায় ফোন করে দ্রুত পুলিশ পাঠাতে বলেন। পরে থানা থেকে পুলিশ এসে ইউএনওর সরকারি গাড়িতে করে যুব কন্ঠ আব্দুর রাজ্জাক রাজা কে থানায় নিয়ে যায়।
এসময় চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, মাসিক সমন্বয় সভায় সবার সামনে তাঁকে থাপ্পড় মারা হয়েছে। এই অপমান মেনে নেওয়া যায় না। সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেছেন।
প্যানেল মেয়র আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে নেগেটিভ কথা বলায় আব্দুল জলিলকে সতর্ক ও সংযত হতে বলা হয়।
এ সময় আব্দুল জলিল উত্তেজিত হয়ে তাঁকে অপমানজনক ও অশালীন ভাষাল কথা বলেন। আর সেই অপমানজনক কথার প্রতিবাদ করায় আব্দুল জলিল উল্টো তাঁকে থাপ্পড় মারেন।
সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ইসরাফিল হোসেন বলেন, জনপ্রতিনিধিদের এমন আচরণ দুঃখজনক। আইনগতভাবে বিষয়টি ফয়সালা হওয়াই উচিত।
ইউএনও মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, সমন্বয় সভার বিরতিতে তিনি ওয়াশ রুমে যান। সেখান থেকে বের হয়ে দুই জনপ্রতিনিধির মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি দেখতে পান। পরবর্তীতে সভার স্বাভাবিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিনি সদর থানায় ফোন করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আব্দুর রাজ্জাককে সসম্মানে থানায় নিয়ে যায়।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার বলেন, ইউএনওর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মানিকগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র আব্দুর রাজ্জাককে থানায় নিয়ে আসেন। এরপর বুধবার রাত পৌনে ৮টার দিকে আব্দুল জলিল বাদী হয়ে আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এরপর ওই মামলায় আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।
এদিকে বুধবার রাত পৌনে আটটার দিকে যুব কন্ঠ আব্দুর রাজ্জাক রাজার মুক্তির দাবিতে মানিকগঞ্জ শহরে বিশাল বিক্ষোভ করা হয়।