মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। এতে যুবলীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আবু বক্কর সিদ্দিক খান তুষারকে সভাপতি এবং যুবলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবুল বাশারকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহু এবং সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞাপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়। আগামী তিন বছর এই কমিটির মেয়াদ থাকবে। এ ছাড়া আগামী এক মাসের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে বলেও এতে জানানো হয়।
২০০৩ সালে শাহ্ লিয়াকত আলী ভান্ডারীকে সভাপতি এবং হাবিবুর রহমান সেন্টুকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠন হয়। সেই কমিটি দীর্ঘ প্রায় ১৯ বছর পর মানিকগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগ এই নতুন কমিটি পেল।
আজ মঙ্গলবার ফেসবুকে নবগঠিত কমিটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি ভাইরাল হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুভেচ্ছাবার্তা জানাতে শুরু করেন জেলা আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
এদিকে নবগঠিত এই কমিটিকে অনেকে ‘পকেট কমিটি’ বলছেন। টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের দিয়ে কমিটি আনায় ত্যাগীরা বাদ পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে কমিটির প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদিকুল ইসলাম সোহা বলেন, ‘কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার একজন মাদকসম্রাট। সে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি। অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা আয় করেছে। এ বিষয়ে গত কয়েক মাস আগে মানিকগঞ্জ থেকে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক রুবেলসহ সাতজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সাদিকুল ইসলাম সোহা আরও বলেন, ‘আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা চান স্বেচ্ছাসেবক লীগের মূল নেতৃত্বে যাঁরা আসবেন তাঁরা শিক্ষিত ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আসবেন। এরপরও আবুল বাশারের মতো একজন অশিক্ষিত মাদক চোরাকারবারিকে দিয়ে কমিটি দেওয়া হয়েছে। এই কমিটি আমরা মানি না। পকেট কমিটি বাতিলের দাবিতে আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করব।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল বাশার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘সেবা শান্তি প্রগতি’ স্বেচ্ছাসেবক লীগের মূলনীতি, আমরা সকলকে সঙ্গে নিয়ে ওই মূলনীতি বাস্তবায়ন করব।
আবুল বাশার বলেন, ‘ছাত্রলীগ করে আসা সক্রিয় অনেক নেতা-কর্মী আছে যারা পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পাবে। এতে করে জেলার রাজনীতি আরও বেশি প্রাণবন্ত হবে। আমরা সকলে মিলে স্থানীয় রাজনীতিকে আরও বেশি শক্তিশালী করতে পারব। পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা চাই।’
নবগঠিত কমিটির বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিপি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অন্যদিকে নবগঠিত কমিটির মূল্যায়ন নিয়ে কিছু বলতে চাননি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল। তিনি বলেন, মানিকগঞ্জ জেলায় একটি কমিটি প্রয়োজন ছিল। দীর্ঘদিন পর হলেও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়ায় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ধন্যবাদ জানান।