1. abkiller40@gmail.com : admin : Abir Ahmed
  2. ferozahmeed10@gmail.com : moderator1818 :
পরগাছা দিয়ে ক্ষতি হয়- কিন্তু সেবামূলক রাজনীতি হয়না। - Barta24TV.com
ভোর ৫:০২, মঙ্গলবার, ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরগাছা দিয়ে ক্ষতি হয়– কিন্তু সেবামূলক রাজনীতি হয়না।

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২২
  • 345 Time View

-ইকবাল আহমেদ লিটন

প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তবুও ক্ষতি হয়। তবে পরিকল্পনা থাকায় ক্ষতি কম হয়। মনুষ্যসৃষ্টি দূর্যোগে তারচেয়েও বেশি ক্ষতি হয়। জাতীয় রাজনীতিতে পরগাছাদের প্রবেশের ফলে কি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা বাংলাদেশের জনগন উপলদ্ধি করতে পারছে। রাজনৈতিক নেতারা এখন বহুগুনে গুনান্বিত। তারা একসাথে সমাজসেবক, রাষ্ট্রের, জনগনের সেবক, ব্যবসায়ী, দাতা, উদ্যেক্তা, নীতি নির্ধারক, বিশ্লেষক, এমপি, মন্ত্রী সবকিছু। তাদের সেই বহুগুনের ফলে প্রতারনা, অধিক মুনাফা, খাদ্যে ভেজাল, ট্যাক্স, গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ চুরি সহ নানা রকম যন্ত্রণায় জাতি কাতর!

জাতীয় রাজনীতি এখন ব্যবসায়ী, হাইব্রীড, দালাল, সুবিধাবাদিদের হাতে জিম্মি। তারাই জনগনের সাথে সম্পৃক্ততা ছাড়াই ফরমানিলযুক্ত রাজনীতির প্রবর্তন করছে। এখন মিছিল, মিটিং, সভা, সমাবেশ সহ কোন কর্মকান্ডে নেতার উপস্থিত থাকতে হয়না। নেতার চামচারাই সবকিছু সামাল দিয়ে তারপর নেতার ছবি দিয়ে মিডিয়া ও প্রেসে পাঠিয়ে দেয়। পরেরদিন নেতার ছবি পত্রিকা ও মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয়। এক কথায় টাকাই সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হয়। সেই পরিস্থিতিতে ছাত্র বা যুব রাজনীতির সম্পৃক্তরা নির্দিষ্ট কোন না কোন নেতার অনুসারি হয়ে কাজ করে।

সংগঠনের গঠনতন্ত্র বা রাজনৈতিক আদর্শ বলতে তাদের মধ্য কিছু নাই। তারা নির্দিষ্ট নেতার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করে থাকে। তাই তারা ছাত্র বা যুব নেতা নামধারী হতে পারে কিন্তু বাস্তবতা হলো তারা কারো নিযুক্ত দালাল বা চামচা। বর্তমান পরিস্থিতি দেখে চুপ করে বসে থাকা কোনভাবে সম্ভব নয়। শ্রমিক রাজনীতি আর ছাত্র বা যুব রাজনীতি কোনদিন এক হতে পারেনা। জাতীয় রাজনীতির সাথেও এর ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। চাইলেই হুটোপুটি করে নেতা হওয়া যায় না। এরজন্য আইন ও নীতি, কর্মক্ষেত্রের নিয়ম, প্রতিষ্ঠানের নিয়ম- নীতি, মানুষের নায্য অধিকার, কাজের ধারা সহ মানুষের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। একটি মানুষের উপার্জনের উপর তার পরিবার নির্ভরশীল। এখানে সুষ্ঠ ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে ব্যপক বিপর্যয় ঘটে। তাই হুট করে এসেই নেতা বনে রাজনীতি করা কোনদিন সম্ভব নয়। এখন সুযোগ পেয়ে অনেক দালাল, চামচা, ধান্দাবাজ, বাটপার, পোষ্টিংবাজরা প্রাণের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে ভিড় জমিয়েছে। যাদের এখনো কর্মী হওয়ারও যোগ্যতা হয় নাই। এদের মধ্যে আবার কিছু রাজনীতির সুযোগ সন্ধানীরাও ঢুকে গেছে।

প্রিয় ভাই – বোনেরা আপনারা জানেন কারা বিভিন্নভাবে ধান্দাবাজি চালানোর জন্য এমপি, মন্ত্রী, অফিসারদের দালালি করে কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। এরা কি কোনদিন সাধারণ মানুষের পক্ষে কথা বলতে পারবে? অফিসারদের সাথে যারা সিষ্টেমের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে টাকা কামাচ্ছে তারা কি কখনো অফিসারদের বিরুদ্ধে কোন কথা বলবে?

অসৎ বড় ও মাঝারী নেতা কর্মীদের পাশাপাশি দূনীতিবাজ ব্যবসায়ী, আমলা ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সাথে নির্বাচিত অসাধু জনপ্রতিনিধিগন ঘনিষ্ট যোগাযোগ বলয় গড়ে তোলেন। অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতা দূনীতিবাজ ব্যবসায়ী, আমলা ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে পরের নির্বাচনের জন্য টাকা মজুতের জন্য দু-হাতে টাকা আয় করেন। বেশী বেশী টাকা আয়ের যেহেতু কোন সটকাট নৈতিক পথ নেই তাই বাঁকা পথে যেতে তাঁদের আপত্তি থাকে না। আর এভাবে টাকা আয় করতে গিয়ে নৈতিকতা ভূলুণ্ঠিত হয়ে পড়ে। অসৎ ব্যবসায়ী, আমলা, অপরাধী ও রাজনীতিবিদদের সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে। ফুলে ফেঁপে হন কলাগাছ।

রাজনীতি কঠিন বিষয়। রাজনীতিতে তিনটি জিনিস জরুরি (১) প্রত্যয় (২) সততা (৩)আদর্শের প্রতি অবিচল বিশ্বাস। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই তিনটারই বড় বেশী অভাব। এখন বেশীরভাগ মানুষই রাজনীতি করে দুই কারনে (এক) অর্থ লোভ আর (দুই) ক্ষমতা। প্রকৃত রাজনীতিবীদরা ধনী হয়না। এখন রাজনীতি ধনীদের প্রতিযোগিতা কেবল। নৈতিকতা আর দেশপ্রেম গৌন ভুমিকায়। মেধাবী নেতৃত্বের সুযোগটি আর নেই। হাতে গোনা কিছু নেতা ছাড়া বেশীরভাগ নেতাই এখন ধনীদের তালিকায়। যাদেরকে সুশিল বলে গন্য করা হত তারাও এখন প্রতিযোগিতায়। এর মধ্যেই বেছে নিতে হবে একজন যিনি হবেন জননেতা। আসলে তারা নেতা নয়, প্রতিনিধি। নেতা হবেন তিনি যে জনতার কথা বলে। যে দেশের মানূষের প্রগতির কথা বলে, যিনি বিবর্তনের স্বপ্ন দেখেন। দলের কর্মী হওয়ারও বাধ্যকতা আছে। একজন রাজনৈতিক কর্মী দলের নেতৃত্বের প্রতি অনঢ় থাকবে। কর্মীবাহিনীই হবে দলের চালিকাশক্তি। নেতার সাথে কর্মীর সম্পর্কটি হবে বিশ্বাসে অটল। কর্মীকে দেখেই সবাই বুঝে যাবে নেতৃত্বটি কত মজবুত। সেই সরল বিশ্বাসটি যেমন নেই, ভরসাস্থলটিও নড়বড়ে। এখন অর্থই রাজনীতির চালিকাশক্তি। অর্থের লোভেই কর্মী বদল হয় প্রতিদিন। লেবাস বদল করে নেতা বনে যায় রাতারাতি।
সংগ্রামী ভাই ও বোনেরা আপনারা বর্তমান ধান্দাবাজ নেতাদের যেভাবে চেনেন, তা তাদের দীর্ঘদিনের কর্মকান্ড দেখেই চেনেন। কিন্তু এখন এমন কিছু দূবৃত্ত আমাদের মাঝে ঢুকে গেছে, তারা যদি কোনভাবে একবার সুযোগ পায়, তাহলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে নরকে পরিনত করবে। এখন যেমন সন্ত্রাসী, নেশাখোড়, চোরদের উৎপাত চলছে, তার আকার আরো ব্যাপক আকার ধারণ করবে, যদি এই চিন্হিত গ্রুপটি কোনভাবে সুযোগ পায়। ভেবে – চিন্তাকরে- বিবেকবুদ্ধি খাটিয়ে এদেরকে প্রতিহতো করুন। শুধুমাত্র মন্ত্রী এমপি’দের দুর্নীতি বন্ধ হলে জনগণের নিকট দুর্নীতি বন্ধের উপলব্ধি হবে না; এর জন্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের ঘুষ লেনদেন বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিটা ত্যাগী নেতা কর্মীর সাফল্য ও উন্নতি কামনা করছি।

আমাদের চাওয়া এই সুন্দর বাংলাদেশকে আরও সুন্দর করে গড়ে তুলতে বর্তমান মন্ত্রী পরিষদ থেকে শুরু করে আমলা এবং সাধারন মানুষের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে এই কারনে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পক্ষে তাহলেই আমরা গড়ে তুলতে পারবো সত্যিকারের বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধামুক্ত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু–
বাংলাদেশ চিরজীবি হোক।

লেখকঃ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা -ইকবাল আহমেদ লিটন,,সদস্য সচিব আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগ ও অভিযোগ বার্তার প্রধান উপদেষ্টা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category