দোয়ারাবাজারে কেন্দ্র ফি’র নামে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, এলাকাজুড়ে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া।
দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
দোয়ারাবাজারে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে কেন্দ্র ফির নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ ওঠেছে। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রতিষ্ঠান প্রধান, কেন্দ্র সচিব এবং উপজেলার রোছমত আলী রামসুন্দর স্কুল ও কলেজ, বড়খাল স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেছেন শিক্ষার্থী অভিভাবকরা।
অভিভাবকদের অভিযোগ, কেন্দ্র ফির নামে অতিরিক্ত এবং ডাবল টাকা আদায় করা হয়েছে। এসব বিষয়ে পরীক্ষা চলাকালীন বড়খাল স্কুল ও কলেজ অধ্যক্ষের কাছে জানতে চাইলে তিনি জবাব দেননি। আমাদের রেখেই কেন্দ্র ত্যাগ করেন।
একাধিক অভিভাবকরা জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফি ছিল ১৭শ’ ৮০ টাকা, তন্মধ্যে ফরম পূরণের সময় কেন্দ্র ফিসহ নেওয়া হয় ২৯ শত টাকা করে। ফরম পূরণের সময় অতিরিক্ত ফি নেওয়ার পরও পরীক্ষা অনুষ্ঠানের পূর্বে আবার কেন্দ্র ফি বাবত প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আরও ৭শ’ টাকা করে আদায় করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বড়খাল স্কুল ও কলেজ কেন্দ্রে এবার এইচএসসি’র মোট পরীক্ষার্থী ৩৩২ জন। এরমধ্যে রোছমত আলী রামসুন্দর স্কুল ও কলেজের পরীক্ষার্থী ১০৬ জন।
শিক্ষার্থী অভিভাবক ও বোগলা রোছমত আলী রামসুন্দর স্কুল ও কলেজের গভর্নিংবডির সদস্য হাবিবুর রহমান শেখ চান জানান, ফরম পূরণের সময় তিন কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৪শ’ টাকা করে কেন্দ্র ফি নিয়েছেন। পরবর্তীতে কেন্দ্র ফির নামে আরও ৭শ’ টাকা করে নিয়েছেন। আমি নিজেও ৭ শ টাকা দিয়েছি। বোগলা রোছমত আলী রামসুন্দর স্কুল ও কলেজ প্রধান এবং কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ যোগসাজশে অতিরিক্ত ফি নিয়েছেন। আমরা জানতে আসলে বড়খাল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ নজীর আহম্মদ প্রতিষ্ঠান ছেড়ে পালিয়ে যান। অতিরিক্ত ৭শ টাকা কিসের নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে প্রশাসনিক তদন্ত করে অভিভাবকদের ফেরত দেওয়ার দাবি জানাই।
জাহাঙ্গীর গাঁও গ্রামের শিক্ষার্থী অভিভাবক আব্দুছ সালাম বলেন, ফরম পূরণের সময় কেন্দ্র ফিসহ টাকা নেওয়া হলেও পরবর্তীতে আরও ৭শ’ টাকা নিয়েছেন।
ছনুগাঁও গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, কেন্দ্র ফি বাবত ৭ শ’ টাকা চেয়েছিলেন আমি ৬শ টাকা দিয়েছি।
বাংলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান এম আবুল হোসেন বলেন, পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে কেন্দ্র ফি’র নামে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হয়েছে বলে জেনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
জানতে চাইলে বোগলা রোছমত আলী রামসুন্দর স্কুল ও কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল অতিরিক্ত ৭শ টাকা নেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় আমরা দিয়েছি। বিভিন্ন খরচ বাবদ অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়েছে।
পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বড়খাল স্কুল ও কলেজ অধ্যক্ষ নজীর আহম্মদ জানান, আমরা বোর্ড নির্ধারিত টাকা নিয়েছি। অতিরিক্ত ফি আদায় করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা প্রিয়াংকা বলেন, শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্দেশনা দিয়েছি সরকারের নির্ধারিত ফির বাইরে যেন কোন টাকা নেওয়া না হয়। যদি অতিরিক্ত ফি আদায় করা হয়ে থাকে এবং কোন অভিভাবক আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তাহলে খতিয়ে দেখে অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।