দেশের ২৫ জেলায় ছড়িয়ে পড়ল রাসেল ভাইপার
নিউজ ডেক্সঃ
এক সময়ের বিলুপ্ত বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার ক্রমেই যেন রাজত্ব গেড়ে বসতে শুরু করেছে দেশব্যাপী। বরেন্দ্র এলাকা ছেড়ে সাপটির খোঁজ মিলছে বরিশাল, পাবনা বরিশাল, পটুয়াখালী, চাঁদপুর এমনকি ঢাকার আশপাশের জেলা মানিকগন্জে। অস্তিত্ব মিলেছে ২৫ জেলায়। চলতি বছর এ সাপের কামড়ে মারা গেছেন ১০ জন।
১৭৯৭ সালে স্কটিশ বিঙানী ফেড্রিক রাসেল এ সাপ সম্পর্কে অনেক কিছু লিখে গেছেন আর তাই তারনাম অনুসারে করা হয়েছে। রাসেল ভাইপার দেখতে অনেকটা অজগরের বাচ্চার মতো। ছোট ও সরু লেজের সরীসৃপটি দৈর্ঘ্যে তিন থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। মাথা চ্যাপ্টা, ত্রিভুজাকার এবং ঘাড় থেকে আলাদা। শরীরজুড়ে অনেকটা চাঁদের মতো গাঢ় বাদামি গোল গোল দাগ। দৈহিক এই বৈশিষ্ট্যের কারণে শুকনো পাতা বা ধান ক্ষেতের মধ্যে খুব সহজেই লুকিয়ে রাখতে পারে নিজেকে। রাসেল ভাইপার সাপ চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া নামেও পরিচিত।সাধারণত সাপ মানুষকে এড়িয়ে চললেও ঠিক উল্টো স্বভাব রাসেল ভাইপারের। নিজেকে বিপন্ন মনে করলেই করে বসে আক্রমণ। আক্রমণের ক্ষেত্রে এটি এত ক্ষিপ্র যে, ১ সেকেন্ডের ১৬ ভাগের ১ ভাগ সময়ে শেষ করতে পারে পুরো প্রক্রিয়া। ক্ষেপে গেলে শব্দ করে প্রচণ্ড জোরে। ঠিক যেন প্রেসার কুকারের মতো।রাসেল ভাইপারের বিষ হেমাটোটক্সিক, যার কারণে ছোবল দিলে আক্রান্ত স্থানে পঁচন ধরে। ছোবলের পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফুলে যায় ক্ষতস্থান। এর বিষ নষ্ট করে দিতে পারে ফুসফুস, কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ।বেশির ভাগ সাপ ডিম পাড়লেও রাসেল ভাইপার বাচ্চা দেয়। গর্ভধারণ শেষে স্ত্রী রাসেল ভাইপার সাধারণত ২০ থেকে ৪০টি বাচ্চা দেয়। তবে ৮০টি পর্যন্ত বাচ্চা দেয়ার রেকর্ডও আছে। একদিকে উচ্চ প্রজনন ক্ষমতা, অন্যদিকে বেজি, গুইসাপসহ প্রকৃতি থেকে সাপের শত্রু বিলীন হয়ে যাওয়া সেইসঙ্গে ইঁদুর, ব্যাঙসহ সাপের পর্যাপ্ত খাবারের উপস্থিতি থাকায় বাড়ছে রাসেল ভাইপার সাপের প্রজনন।
দেশে বছরে চার লাখেরও বেশি মানুষকে সাপে কাটে, যাদের মধ্যে সাত হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় বলে জানা যায়।