বার্তা২৪টিভি.কম নিউজ ডেক্সঃ
দেশে চলছে আরেক কাউন্ট ডাউন। স্বপ্নের সেতু উদ্বোধনে আর মাত্র ১৩ দিন, আর মাত্র ১২ দিন, ১১ দিন….।
এভাবে দৃষ্টি আকর্ষক ঘোষণা দিয়ে জাতীয় গণমাধ্যমগুলো গোটা দেশে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দিচ্ছে। জানিয়ে দিচ্ছে সারা বিশ্বকেও। আভ্যন্তরীণ দুষ্টু রাজনীতি আর আন্তর্জাতিক প্রতিহিংসার বেড়াজাল ছিন্ন করে পদ্মা সেতুর সফলতা হয়ে উঠছে বাংলাদেশের সক্ষমতার এক উজ্জল প্রতীক। দেশীয় আঁতেলদের উস্কানিকে পুঁজি বানিয়ে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার একটি সিন্ডিকেট বাংলাদেশকে কোণঠাসা করে অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করার প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে আসছে। পদ্মা সেতু মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছে বলেই যে চক্রটির সব অপচেষ্টা শেষ হয়ে গেছে তা ভেবে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
সে হিসেবে আন্তর্জাতিক চক্রটির দর্প চূর্ণ করে মাথা উচু করে দাঁড়ানো পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সময়টা নানা কারণেই অতীব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে দেখতে চান দেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। সফলতার প্রতীককে যে কোনো মূল্যে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করতে প্রতিহিংসা পরায়ন চক্রটি ঘৃণ্য কোনো অপকর্ম সাধনেও যে পিছুপা হবে না তা বলার জন্য জ্যোতিষী হওয়ার প্রয়োজন নেই। ঘোষণাবিহীন অপকর্ম ঠেকানো কষ্টকর, ঝামেলাপূর্ণ।
তারপরও রাষ্ট্রীয় মর্যাদার প্রশ্নে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধিসহ সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে এটাই তো নাগরিক চাওয়া থাকার কথা। যদি ঘর শত্রু হয় বিভীষণ তাহলে বাইরের শত্রুর জন্য তা আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়ায়। দেশীয় দুষ্টু রাজনীতির সহযোগিরা যখন নিজেদের ক্ষমতাতেই ৬৩ জেলায় একযোগে সিরিজ বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেদের সক্ষমতার জানান দিয়েছিল। সেই চক্রই আন্তর্জাতিক চক্রের সহায়তা পেলে কী না করতে পারবে? যদিও বলা হয়, এদেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কয়েক বছর ব্যাপী লাগাতার অভিযান চালিয়ে জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর মেরুদন্ড গুড়িয়ে দিয়েছে। তবে বাস্তবে সেসব জঙ্গিদের অবস্থা ও অবস্থান কেমন তা আমাদের রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ভাল জানে, তারাই জানুক। অযথা জুজুবুড়ির ভয় দেখানোর লক্ষ্যে এ লেখনির সূত্রপাত করা হয়নি। বরং এদেশে কোনো অঘটন না ঘটা পর্যন্ত আগাম সতর্কতা অবলম্বনের অতীত রেকর্ড নেই বললেই চলে। আমরা হৈচৈ করি, নানা বিশ্লেষণের ফুলঝুরি ছড়াতে থাকি কেবল কোনো অঘটন ঘটে যাবার পরই।
তবে যাই হোক, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ও উদ্বোধন পরবর্তী সময় পর্যন্ত দেশবাসীর নজর সেদিকেই থাকা উচিত। আর সব প্রশাসনের নজরদারিও থাকুক পদ্মাকে ঘিরেই। এরমধ্যে ছোট বড় কোনো স্যাবোটাজ মানেই হলো অন্যদিকে দৃষ্টি ঘোরানো। তার মানে সীতাকুন্ড’র বিস্ফোরণজনিত মর্মন্তুদ ঘটনাকে আমি স্যাবোটাজ বলছি না, তবে এ ঘটনায় কিন্তু সকলের দৃষ্টিপাত পদ্মা থেকে সরে কন্টেইনার ডিপোমুখী হয়েছিল। পৃথিবীর দেশে দেশে নাশকতা সৃষ্টিকারী গ্রুপগুলো বরাবরই একদিকে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে লোক জড়ো করে টার্গেটকৃত স্থানকে ঝুঁকিমুক্ত বানায় এবং বড় ধরনের নাশকতা ঘটিয়ে ফেলে। অর্থাত দেশের অন্যত্র সংঘটিত ছোট বড় যে কোনো দুর্ঘটনায়ও দৃষ্টি থাকুক পদ্মার দিকেই, জোরদার থাকুক প্রশাসনিক নজরদারিও এটাই বাংলাদেশের সাধরন আম জনতার চাওয়া আর সেই সাথে সুন্দর পরিবেশে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হউক এটাই হলো সবার কাম্য।