মোঃ সাইফুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
জনবল সংকটের অজুহাতে ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা গ্রাহকেরা পদে পদে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। সেবাগ্রহীতারা দিনভর পাসপোর্ট অফিসে বসে থেকে কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে ক্ষোভ নিয়ে দালালের কাছে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা খরচ করছে। দপ্তরটিতে সেবার চেয়ে ভোগান্তিই বেশি বলে অভিযোগ করেন সেবা গ্রহীতারা। অপরদিকে ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক শওকত কামাল বলছেন, জনবল সংকটের কারণে এমন সমস্যা হচ্ছে। পাসপোর্ট অফিস মাত্র তিনজন লোক নিয়ে চলছে। নাইট গার্ড এর মাধ্যমে পাসপোর্ট ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও আইটসোর্সিং এর ২/৩ জন কাজ করছে। সরেজমিনে ঠাকুরগাঁও শহরের ইসলামবাগ এলাকায় পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দেখা যায় কোন লোকজন নেই। অফিসের পিয়নকেও পাওয়া যায় নাই। পাসপোর্ট এর জন্য আসা অনেক গ্রাহককে অফিসে বসে থাকতে দেখা যায়। হরিপুর উপজেলা থেকে পাসপোর্ট করতে আসা রফিকুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকাল ১১টায় অফিসে এসেছি এখন দুপুর ১টা বাজে কিন্তু কারো দেখা নেই। দুই একজনের দেখা পাওয়া গেলেও তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা কিছুই বলছে না। তাদের ভাব দেখে মনে হচ্ছে আমাদের দেখে তারা বিরক্ত হচ্ছে। তারাই চাচ্ছে আমরা যেন দালালের কাছে যাই। শহরের নাবিল কাউন্টারের ম্যানেজার শাহদাৎ হোসেন বলেন, দুই ঘণ্টা থেকে অফিসে বসে আছি একটা লোকও নাই। এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি অফিস এভাবে ফাঁকা ফেলে রাখা মানে দায়িত্বের অবহেলা। পরিচালককে কয়েকবার কল দিয়েছি উনিও ফোন রিসিভ করেন না। অফিসে কার সাথে কথা বলবো কোন উপায় পাচ্ছি না। পাসপোর্ট করতে এসে এত ভোগান্তিতে পড়েছি যে বলার কিছু নেই। ভোগান্তি থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি বিষয়গুলো দেখার জন্য। পাসপোর্ট নিতে আসা রুবেল ইসলাম বলেন, তিন মাস পরে আজকে পাসপোর্ট হাতে পেলাম। পাসপোর্ট করতে যে এত ভোগান্তি তা এবার হারে হারে টের পেলাম। পাসপোর্ট নেওয়ার জন্য এ পর্যন্ত ৪/৫ দিন ঘুরে গেছি অফিস থেকে। অফিস কোন লোক থাকে না এই সমস্যার জন্য এতবার ঘুরে যেতে হয়েছে। ঠাকুরগাঁও মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ দানেশ পাসপোর্ট করার জন্য অফিসে ৩ ঘণ্টা বসে থেকে চরম ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি বলেন, আমরাই যদি এত ভোগান্তিতে পরি তাহলে সাধারণ মানুষের কি অবস্থা একবার ভেবে দেখেন। অফিসে আসার পরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে কিন্তু কোনো লোক নেই। টাকা দিয়ে সেবা নিতেও এত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। কতৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষন করছি এর একটা দ্রুত সমাধানের জন্য। অভিযোগের বিষয় নিয়ে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক শওকত কামালের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমিসহ আরো দুইজন এই অফিসে কাজ করছি। বাকি যারা কাজ করে তারা সবাই আইটসোসিং। এত বড় অফিস ৩ জন মানুষ দিয়ে পরিচালনা করার জন্য এই সমস্যাগুলো হচ্ছে। জনবল সংকটের কারণেই মাঝে মাঝে সেবাগ্রহীতাদের সমস্যা হচ্ছে এমটাই তিনি জানান।