সানজিদ মাহমুদ সুজন,শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ
শরীয়তপুরের, জাজিরা উপজেলার, মুলনা ইউনিয়নে বইছে ৭ম ধাপের নির্বাচনিয় হাওয়া। জাজিরায় নির্বাচন হচ্ছে একটি বৃহৎ উৎসব। এ দেশে দল বেঁধে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার একটি রীতি দীর্ঘদিন ধরে চালু আছে। নির্বাচন এলে ইউনিয়ন ব্যাপি উৎসবের আবহ তৈরি হয়। সাধারণ মানুষ নিজ নিজ গ্রামে ছুটে যান।
নির্বাচনের ফলাফলে একটি বিষয় প্রায়ই দেখা যায়- কালো টাকার মালিক বা দুর্নীতিবাজরা নির্বাচিত হচ্ছে। অর্থনৈতিক অবস্থা, শিক্ষা, নাগরিক অধিকার ও দায়িত্ববোধ সম্পর্কে ভোটাররা অসচেতন থাকার কারণেই এমনটি ঘটছে। এর ফলে রাজনীতি দুর্নীতিবাজ, খুনি, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের দখলে চলে যাচ্ছে, যা বিপজ্জনক।
আজকাল ভালো প্রার্থী পাওয়া দুষ্কর। অথচ জনগণ চায় সৎ, শিক্ষিত, চরিত্রবান, আদর্শবাদী ও সমাজসেবার মানসিকতাসম্পন্ন যোগ্য মানুষ জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হোক। বস্তুত যারা সুখে-দুঃখে জনগণের পাশে থাকবে, কেবল তারাই জনপ্রতিনিধি হওয়ার অধিকারী।
এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, যোগাযোগ, শিক্ষা, কৃষি ও সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনে সক্ষম ব্যক্তিকেই ভোট দেয়া কর্তব্য বলে মনে করা উচিত। যারা ঘুষ খায়, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পায়ে ধরে, ক্ষমতায় গেলে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার করে, তাদের বর্জন করতে হবে।
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষিত জাতি গড়ার জন্য সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিনিধিদের শিক্ষিত হওয়া দরকার। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমাদের দেশে নির্বাচনে পেশিশক্তি, অর্থের প্রভাব ইত্যাদি কারণে অশিক্ষিত জনপ্রতিনিধিরা এক একটি নির্বাচনী এলাকার দায়িত্ব নেন। এদের অনেকেই অজ্ঞতার কারণে কোথায় প্রকল্প বা কোথা থেকে উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ আনতে হয়- তা ঠিকমতো বুঝতে পারেন না। ফলে ওই এলাকা উন্নয়নবঞ্চিত হয়।
অন্যদিকে অনেক জনপ্রতিনিধি সেবার পরিবর্তে ব্যবসার জন্য রাজনীতি ও নির্বাচন করে। নির্বাচিত হয়ে সে জনসেবার কথা ভাবেই না। আমরা জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচিত করি এলাকা ও জনগণের পক্ষে এবং জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাজ করার জন্য। অথচ দেখি- তারা জনগণের পক্ষে যতটা না কথা বলেন, তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক বক্তব্য দেন। এর ফলে এলাকায় উত্তেজনা শুরু হয়।
আমাদের দেশে দিন দিন অনেক কিছুরই সংজ্ঞা বদলে যাচ্ছে। একইভাবে বদলে যাচ্ছে জনপ্রতিনিধির সংজ্ঞাও। আগে জনসেবার লক্ষ্য নিয়ে সম্ভ্রান্ত, শিক্ষিত ও সৎ মানুষরা জনপ্রতিনিধি হতেন। সাধ্যমতো তারা মানুষকে সেবা দেয়ার চেষ্টা করতেন। এখন অবৈধ অর্থের মালিক, সন্ত্রাসী বা পেশিশক্তিতে বলীয়ান ব্যক্তিরাই অধিক হারে জনপ্রতিনিধি বনে যাচ্ছেন। মান-সম্মানের ভয় আছে, এমন কোনো ব্যক্তি এসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করারই সাহস পান না। আজকাল জনপ্রতিনিধি সম্পর্কে মানুষের ধারণাই পাল্টে বদলে যাচ্ছে এবং এর ফল যা হওয়ার সেটাই হচ্ছে।
নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে হবে। তার সাথে জনগনের উচিত টাকায় বিক্রি না হয়ে, যারা আপনাদের সুখে দুখে পাশে থাকে,আপনাদের সাথে নম্র ভদ্র আচরন করে,সাধ্য মতো আপনাদের পাশে থাকে ও মোরায় সোফায় সবস্থানে বসে পরিবার সহ সময় দিতে পারে তাদেরকে নির্বাচিত করা।
এ নিয়ে সরাসরি জনগনের মতামত থাকবে আগামীকাল।