জিয়াউর রহমান কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি:
বিএনপি নির্বাচনে না এলেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন কুষ্টিয়ার দুই হেভিওয়েট প্রার্থী। কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন মিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিন। তিনি চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চান। ইতোমধ্যেই জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
একইভাবে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী মাহবুব-উল আলম হানিফের কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনেও শক্ত লড়াই হতে যাচ্ছে। গত দুটি সংসদ নির্বাচনে হানিফের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও এবার প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কুষ্টিয়া পৌরসভার জনপ্রিয় মেয়র আনোয়ার আলীর ছেলে পারভেজ আনোয়ার তনু। তনু ক্রীড়া সংগঠক ও ব্যবসায়ী। তরুণদের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা আছে। তিনি এরই মধ্যে স্থানীয় নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়নপত্র তুলেছেন। বিষয়টি টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে।
কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) : হাসানুল হক ইনু বনাম কামারুল আরেফিন
গত তিনটি নির্বাচনে কুষ্টিয়া-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন হাসানুল হক ইনু। ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে তথ্যমন্ত্রী হন। পরপর তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় এমপি হন ইনু। এবার তার সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছেন মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিন। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেয়নি। আসনটি এখনও ফাঁকা রাখা হয়েছে। ইনুকে ছাড় দেওয়ার জন্য আসনটি ফাঁকা রাখা হয়েছে বলে মনে করছেন দলটির নেতারা। বিএনপি-জামায়াত না আসায় এবার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা ইনুকে ছাড় না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে প্রকাশ্যে আলোচনা চলছে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের মতামত নিয়ে কামারুল আরেফিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
মিরপুর ও ভেড়ামারায় কামারুলের ভোটব্যাংক রয়েছে। পরপর দুটি উপজেলা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হন তিনি। মিরপুর উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘জাসদের প্রতি নানা ক্ষোভ রয়েছে নেতাকর্মীদের। আওয়ামী লীগের ভোটে ইনু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও তিনি সম্পর্ক রাখেন না। উল্টো গত দুই বছরে আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে হত্যা করেছে জাসদের নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া হামলা-মামলা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের কোণঠাসা করে রাখার চেষ্টা করেছে জাসদ। এসব নিয়ে কর্মীদের মনে ক্ষোভ ও হতাশা রয়েছে। তাই কামারুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও আমরা তার নির্বাচন করতে চাই।’
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) : মাহবুব-উল আলম হানিফ বনাম পারভেজ আনোয়ার তনু
স্থানীয় রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তনু ভোটের মাঠে শেষ পর্যন্ত থাকলে এখানে হিসেব বদলে যেতে পারে। কারণ ২০১৮ সালে নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী দিলেও তনু মাঠে নামতে পারেননি। হামলা-মামলায় আক্রান্ত হয়ে ঘরে বসে থাকতে হয়েছে। তনুর বাবা আনোয়ার আলী কুষ্টিয়া পৌরসভার পাঁচবারের নির্বাচিত মেয়র। তিনি এ আসনে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সামান্য ভোটে পরাজিত হন। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আলী এখনও দলের অন্যতম জনপ্রিয় নেতা। পৌর এলাকায় তার নিজস্ব ভোটব্যাংক আছে। তার ছেলে হিসেবে যুবনেতা তনু প্রার্থী হলে একটু বাড়তি সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া ভেতরে ভেতরে আনোয়ার আলীর সঙ্গে হানিফসহ তার অনুগতদের বিরোধ আছে। সর্বশেষ পৌর মেয়র আনোয়ার আলীর কার্যালয়ে হামলা ও তছনছ করা হয় রাতের আঁধারে। চুরি হয়ে যায় গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাগজপত্র। এ নিয়ে আনোয়ার আলী ক্ষুব্ধ হন।
অন্যদিকে টানা দুবারের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এলাকায় তথা কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নকাজ করেছেন, যা অন্য কারও সময় হয়নি। তবে নেতাকর্মীদের অভিযোগ, হানিফের আমলে সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ ছিল তার চাচাতো ভাই সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতার। তিনি দলের ত্যাগীদের কোণঠাসা করে বিএনপি-জামায়াত ও হাইব্রিড নেতাদের কাছে টেনে নেন। এ কারণে শহর ও ইউনিয়নে দলটির অনেক নেতাকর্মীর মনে কষ্ট আছে। হানিফ দলের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় প্রকাশ্যে কেউ বিরোধিতা না করলেও এর প্রভাব পড়তে পারে ভোটের ব্যালটে। এতেও বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন পারভেজ আনোয়ার তনু।
প্রধান উপদেষ্টা: ইকবাল আহাম্মদ লিটন|
উপদেষ্টা:প্রফেসার সালেক নিক্সন
প্রকাশক-সম্পাদক এস এম ফিরোজ আহাম্মদ|
অফিস কার্যালয়: ৭০/১ শহীদ রফিক সড়ক মানিকগঞ্জ।|
ই-মেইলঃ ferozahmeed10@gmail.com|
ফোন নং :০১৯৬৮৮০০৮৩০|
ই পেপার