এখনো কিছু মানুষ কি অন্ধকারেই বাস করে ?
কলকাতা থেকে দেবাশীষ রায়ঃ
অমাবস্যার গভীর রাতে তান্ত্রিক নারায়ন সরকার বেছে নিয়েছিল নদীয়া জেলার তাহেরপুরে বীরনগরের অমর চক্রবর্তী কে । কারণ সে ছিল যাতে ব্রাহ্মন । ব্রাহ্মনের রক্ত বেলাপাতায় দিয়ে দেবীকে উৎসর্গ করতে পারলেই নাকি তান্ত্রিকদের সিদ্ধির চরম শিখরে পৌঁছতে পারা যাবে । এই বিশ্বাস থেকেই সেই যুবক কে ফুঁসলে নিয়ে গেছিল দুই তান্ত্রিক ।
বরাত জোরে রামদার মোক্ষম কোপ খেয়েও কিন্তু পালিয়ে যায় ঘোরে থাকা ওই যুবক । উভয়েরই রক্তমাখা জাম্মা কাপড় উত্তরীয় ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়েছে এবং ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে । কিন্তু এখনো উদ্ধার হয় নি সেই অস্ত্রটি । দ্বিতীয় তান্ত্রিক যদিও এখনো অধরা । তার খোঁজে নদীয়া জেলার পুলিশ সব বাস স্ট্যান্ড ও রেল স্টেশনে পুলিশি নজরদারী বাড়িয়েছে ।যদিও নন্দ ওরফে নারায়ন, তার কোন সহযোগীর কথা এখনো বারে বারেই অস্বীকার করে যাচ্ছে ।
গত মাসেই কেরলে একটি নরবলির কথা জানা যায় । মানুষের ধর্মান্ধতা কত নিচু স্তরে পৌঁছলে আর একজন মানুষকে বলি দেবার কথা শুধু ভাবা নয়, সেই কাজটা করার সাহস অর্জন করা যায়, সেই প্রশ্ন সবার মনে জাগিয়ে দিয়েছেন মনোবিদ ডঃ অমিত চক্রবর্তী ।
শোনা যায় বীরনগরের জয়পুর রেল লাইন পাড়ায় নারায়নের নাম হয়েছিল ‘ নন্দ সাধুবাবা’ । আর, দক্ষিন পাড়ার অমর ছিল ধর্মপ্রাণ ; তন্ত্রমন্ত্র আর পুজো আচ্চায় গভীর বিশ্বাসী । সেই বিশ্বাস কে কাজে লাগিয়ে দুই তান্ত্রিক তাকে বলি দিয়ে নিজেরা সিদ্ধ হবার পরিকল্পনা করেছিল ওই দুই তান্ত্রিক । রাত দশটায় এক পুকুর পাড়ে তাকে নিয়ে হাজির হয় দুই তান্ত্রিক । তাকে বলে হয়েছিল, চোখ বুঁজে ডুব দিলেই তার পায়ে ঠেকবে মণিমুক্তো ভরা এক সোনার ঘড়ায় । সমস্ত কিছু অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেও, সোনার ঘড়া কিন্তু মেলেনি । সেই সময়েই সাধুবাবার শাগরেদ তাকে পিছন থেকে জাপটে ধরে, অন্যজন গলায় কোপ ও বসায় । কিন্তু কোন ভাবে সেই যুবক চীৎকার করতে করতে গ্রামের লোকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয় ও পালিয়ে যায় । এবার খোঁজ চলছে, সাধুর শাগরেদ আর সেই রাম দা-টির ।